Posts

অমিতাভ প্রহরাজ ঘুমোতে যাওয়ার পরে : প্রশান্ত হালদার

Image
  WB 43 0732 অ মি তা ভ  প্র হ রা জে র  চড়া, বলা ভালো, তাকে চড়ানো শেষ গাড়ির নম্বর এটাই। হাওড়া জেলা সংশোধনাগারের পিছনের দিকের মর্গ থেকে এই গাড়িতেই তাকে ২০টাকা টোটো ভাড়ার দূরত্বে শিবপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলো। গঙ্গায় তখন ভরা জোয়ার। বৃষ্টি এবং বৃষ্টি। দূরপাল্লার ট্রেনে যাতায়াত ব্যতীত জীবনে পঞ্চমবার হাওড়া জেলায় পা রাখলাম। গন্তব্য মর্গ থেকে শ্মশান। মর্গেও এই নিয়ে তৃতীয়বার। অমিতাভদার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ন্যুনতম। ফেসবুকে বন্ধুও ছিলাম না। শেষ দেখা বইমেলায়। আমাদের মুক্তাঞ্চলের নম্বরবিহীন টেবিলের উল্টোদিকে ধুলোমলিন বসছিল সুপ্রিয়দা তার 'তপোভাগ' বইটা হাতে ধরে। সম্ভবত শেষ দিন তার পাশে নিজের শেষতম বই 'লেখামো' নিয়ে বসে পড়লো অমিতাভ প্রহরাজ ওরফে বেবী। অংশু ওইদিন দুটো বইই নিয়েছিল। লেখামো আমরা যখন তখন পড়ব, এমনটাই ভাবনা ছিল। এই তো সেদিন কেমিক্যাল বায়োলজির ফটকের পাশে আমার মোবাইলের আলোয় অংশু পড়ছিল আনচ্যালেঞ্জেবল সব চিন্তা-বাক্য-খণ্ড, লেখামো থেকেই। সেই ২০০৪-০৫ থেকে অমিতাভ প্রহরাজের নাম জানি। পড়ি তার চিন্তাভাবনা, বাক্যবিন্যাস। তবু কী এক প্রবণতায় জানি না, তার সঙ্গে আমার সেভাবে আলাপ ...

মৌনী মন্ডলের কবিতা

Image
  শিমূলডিহির পৃথিবীতে মৌনী মন্ডল নন ন্যারেটিভ কোনো চালাকি নয়। আমি দু একজনের নাম বলবো তাতেই হয়ে যাবে। এখন যার কথা বলবো আমি নিজেও তার নাম জানতাম না কিছুদিন আগে পর্যন্ত এটা বিস্ময়কর নয় ততটাই সহজ যতটা ফাকার শুধু একটা শব্দ নয়, তাই ফাক আর নাম না করেও বলা যায় মুডের পৃথিবীতে সব তোমারই যদিও তোমাকে এখন যার কথা বলবো, তখনই বলবো যখন তুমি তোমার চোখ খুলে রাখবে, তারপর ভাববে যখন তুমি কিছুই ভাবতে পারবে না কান বন্ধ করে তখন কী করবে যখন তোমার নামে তোমারই সম্পত্তি জিভের জন্য লিখে দেওয়া হবে তখন কোথায় খুঁজবে তুমি তাকে আর তার প্যান্ট, নিজের নিশ্বাসের নীচে নাথing এভাবেও তুলে ধরা যায় তুমি নিশ্চই জানবে মানুষের কথা — মামুশ খামুশ উউউউউউউ আকা চাচা লিখলে আমার চোখই প্রথম উচ্চারণ করে কারণ আমি জানি ওটা দুটো স্পেস বেশি দিলে এইখানে যে ফাঁক সেটাই তোমার ভাষা কেনো না তোমার কোনো ভাষা ছিল না, ছিল প্রথম যাকে আমরা কান্না বলি তার আওয়াজ বাদবাকি ভাষা সিস্টেম অতএব সবসময়ই বানানো কিংবা বাতিল শব্দগুলো নাচে আর মাতৃভাষাকেও আমি পুঁছতাম না যদি তার থেকে প্লাজমা, পদার্থের চতুর্থ অবস্থা বাদ পড়ে যেত তবে এভাবেও আমরা আর ভাষার ন্যাচা...

বিশ্বনাথ পুরকাইতের কবিতা নিয়ে দু-চার কথা

Image
  বিশ্বনাথ পুরকাইতের কবিতা নিয়ে দু-চার কথা প্রশান্ত হালদার বাংলা কবিতা কেমন আছে, এরকম একটা প্রশ্ন তুলে বর্তমান বাংলা ভাষার কবিতা-লেখকদের দিকে তাকানো যায় কিনা, কিম্বা মুকন্দরাম, ভারতচন্দ্র, মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ, সুধীন, জীবনানন্দ, সমর, সুভাষ, উৎপল, বিনয়, আল মাহমুদ, স্বদেশ, ভাস্কর, দেবারতি, জয়, মৃদুল, রণজিৎ, প্রসূন, রাহুল, সংযুক্তাদের কবিতা-পুষ্ট বাংলা ভাষায় যারা নব-সংযোজিত স্বর তাদের নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করা যায় কিনা সেই ভাবনারই অংশ হিসেবে রচনাকালের শুরুয়াতকে মানদণ্ড ধরে গত শতাব্দীর ৯০ দশকের কবি বিশ্বনাথ পুরকাইতের কবিতা নিয়ে রইল দু-চার কথা।   বিশ্বনাথ পুরকাইত (জন্ম ১৯৬৪) বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য এযাবত প্রকাশ করেছেন ৬টি কবিতা গ্রন্থ। সংখ্যায় ৬টি হলেও, কলেবরে, সাকুল্যে সাড়ে-দশ ফর্মা মাত্র। বিশ্বনাথের প্রথম কাব্যগ্রন্থ নিম্নচাপের দিনগুলি (১৯৯৮) ৪৮ পৃষ্ঠার, দ্বিতীয় শান্তি শৃঙ্খলা (২০০৩) ৪৮ পৃষ্ঠার, খণ্ডচৈতন্য (২০০৬) ১৬ পৃষ্ঠার, ২০১৩ তে খণ্ডচৈতন্য-র পরিমার্জিত সংস্করণ সহ মিশ্রপ্রতিক্রিয়া মোট ৩২ পৃষ্ঠার, ২০১৮তে ২২ পৃষ্ঠার ভাষাবাহিত রোগশোক এবং ২০২২-এ ১৬ পৃষ্ঠার ঘটনাচক্র...

পবিত্র সাঁফুইয়ের বই 'সাকি নাচছে' থেকে দুটি গল্প

Image
'সাকি নাচছে' পবিত্র সাঁফুইয়ের প্রথম গল্পগ্রন্থ। মোট ১৪ টি গল্প নিয়ে বইটি বেরোয় ২০১৬তে পরশপাথর প্রকাশনা থেকে। বইটির প্রচ্ছদ ও ভেতরের ছবি এই সময়ের উল্লেখযোগ্য শিল্পী দেবাশিস সাহার আঁকা। বইটি থেকে লেখকের অনুমতি সাপেক্ষে প্রচ্ছদ, ব্যাক কভার ও অলঙ্করণ ও সূচি সহ দুটি গল্প জেপিইজি ইমেজ ফর্মাটে সরাসরি তুলে দিলাম পাঠকের উদ্দেশে। —মুক্তাঞ্চল    পবিত্র সাঁফুই  

শার্ল বোদল্যেরের প্রবন্ধ—অনুবাদ : শুভদীপ মৈত্র

Image
  শিল্পী, দুনিয়াদার, ভিড়ের একজন, এবং শিশু শার্ল বোদল্যের অনুবাদ: শুভদীপ মৈত্র [ অনুবাদকের নিবেদন :-  শুধু কবিতা নয়, শার্ল বোদল্যের-এর প্রবন্ধ আধুনিকতার সংজ্ঞা নির্ধারণের যেমন চাবিকাঠি তেমনি তা উনিশ শতকের আধুনিকতার সময়কাল সন্ধানের মাইলফলকও। এই অনুবাদটি ‘দা  পেইন্টার অফ মডার্ন লাইফ ’ বইয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধগুলো বোদল্যের ১৮৬০ নাগাদ লেখান ও ১৮৬৩ নাগাদ ‘ লে ফিগারো ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়।     দেড়-শ ’ বছরেরও পুরনো এই বইটি আজও আমাদের সময়কে বুঝতে সাহায্য করে কারণ পুঁজিবাদী আগ্রাসনের মুখে বুর্জোয়া সমাজ ও তার নাগরিকতা, সে সময় দাঁড়িয়ে শিল্পের অভিমুখ কী হতে পারে – এই সমস্ত জরুরি প্রশ্নগুলো প্রথম তোলেন বোদল্যের, এরপর ভাল্টার বেঞ্জামিন-এর মতো দার্শনিক ও তাত্ত্বিকরা একে এগিয়ে নিয়ে যান, তাই বোদল্যের এর ফ্ল্যান্যুর বুঝতে না পারলে নিজেদের সময়কে বোঝাও কঠিন। বাংলায় বোদল্যের চর্চা আজকের নয় কিন্তু তাঁর নান্দনিকতার রাজনৈতিক ও সামাজিক দিকগুলোতে নজর পড়েছে কম, বরং তার ব্যক্তি-উৎকেন্দ্রিকতার রোমান্টিসিজমের উদযাপন হয়েছে বেশি। বোদল্যের মেধাহীন স্বভাবকবি...