তদোগেন গিরতের 'যে কথা মরমে বাজার নয়'
ত দো গে ন গি র তে
যে কথা মরমে বাজার নয়
লিখিয়ে ছোকরারা প্রায়ই
দেখি বিপ্লব করছে। বিপ্লব কথাটা আমার সন্দেহজনক লাগে। বিপ্লব আমাকে নেনুয়ার কথা মনে
পড়ায়। নেনুয়া বলেছিল—
মাটন খা লুংগা, বীয়র পী লুংগা, ভ্যাঁস চোদ দুংগা ফির দীবার পে লিখ দুংগা— ক্রান্তি!!!
ভ্যাঁসের কথা সম্পূর্ণত
বাদ দিয়ে, ব্যক্তিগত বা সামাজিক ট্যাবু যদি নেনুয়া ভাঙতো তবে আহ্লাদ হত। তবে নেনুয়া
সর্বভূক, সর্বপেয়ী এমনিতেই। ক্রান্তির প্রয়োজন ওর কেন হয়েছিল, সে’কথা জানি না।
***
পঁচাত্তর আশির
সুবেশ ভদ্রলোক পত্রিকার দপ্তরে সম্পাদককে বলেন—
আমি অমুককে বলে
রেখেছি, আমার গতমাসে বেরনো বইটার রিভিউ করবে, সামনের সংখ্যায় বের করে দিও কিন্তু।
আমি তো ঘুরতে এসেছি, তেমন চিনিনা কিছুই। সম্পাদক, আমাকে বলেন, চেনতো ওনাকে?
—অবশ্যই, ৩-৪ মাস আগের আপনার লেখাটি খুব ভালো লেগেছিল। জৈষ্ঠ ইস্যু বোধ হয়।
আশি,
মানে কিছু না হলেও পঞ্চাশ বছর লিখছেন উনি। বইয়ের আলোচনা ছাপা হচ্ছে, রেগুলার,
নিশ্চয়ই। আমি ওনাকে না চিনলে এর কতটুকু আর থাকে!
উনি বেরিয়ে গেলে
ধীর পায়ে, জিজ্ঞেস করার সাহস হয় না—কি নাম ওনার? ওই যে, বুকের কাছে হাত জড়ো
করে নমস্কার করলাম!
***
ওই যে, কবি চলেছে, মলিন ফ্যাব ইন্ডিয়ার পাঞ্জাবি, কাঁধে, ঝোলাব্যাগে,
পান্ডুলিপি দিয়ে বোনা শূন্যতা। পকেটে তিনটি ক্লাসিক, এক বান্ডিল বিড়ি। ওকে কেউ বোকাচোদা
বলে না, কেউ ফুটবল খেলতে ডাকে না, কন্ডাক্টর বাস ভাড়া চায় না, নেড়ি কুকুর মুখ তুলে
দেখে না। তথাগত, ওকে করুণা কর। ওর দীর্ঘ আকাচা পৈতের রং ফটফটে সাদা করে তোলো।
***
ওপরে যা, তা
কবিতা-লিখিয়ের ভবিষ্যৎ এবং বর্তমান, ক্রমানুসারে। এ’সব বাদ দিয়ে
পোয়েটিক্স নিয়ে ভাবা যাক
***
কি হয়— সঙ্গম শেষে; আলুথালু, অবিন্যস্ত
বাংলা কবিতা তার খোঁপাখোলা চুল নিয়ে আক্রমণ করে, জড়িয়ে থাকতে চায়, তার আলগা বাদামি
ঊরু, জামরঙা বোঁটা, যোনিকেশ, ঘানি, গুপ্তপ্রেস। হাঁফিয়ে উঠি—বলি,
মুক্তি দাও, বলি— অনেক তো হলো, এইবার চা
খাওয়া যাক (মতভেদে কফি), কথাবার্তা, মূল্যবোধ, শ্লেষ ও চেতনা, অপরিসীমের ক্রাফট এবং
হে তাহাদের পার্শ্বচারিতা।
***
আবেগসম্বল কবিতা হলো গে বাহুতে ভীমরুল বসিয়ে বাইসেপ ফোলানো (অন্যাঙ্গও ইমাজিনিয়)—
***
যে
তুমি বুদ্ধি দাও, বৃত্তি দাও, উচ্চরক্তচাপ অনুশোচনাও দিয়ে থাকো, তালতমালের দ্বীপে
'স্বেচ্ছানির্বাসিত' বাঙালি কবির শিথিলতা নেড়ে দিয়ে বলো—খোকা
তুই বড় হবি কবে!
***
সচরাচর
যাঁরা 'ছন্দে' এবং মূলত 'ছন্দেই' লেখেন এবং বেশ লেখেন, গদ্য-ফর্মে কবিতা লিখতে
গেলে তাঁদের আলুথালু হয়ে পড়তে দেখেছি, অসংবৃত, বিস্রস্ত। পরিমিতিবোধ হারিয়ে ফেলতে।
কারণ বোধ হয়, ছন্দের ভিত্তিতে 'পরিমিতিবোধ' গড়ে ওঠা, চিন্তায় নয়। ছন্দ এঁদের লেখায়
একটা লাগামের কাজ করে। গদ্য লিখতে গেলে সেটা হয় না অবশ্য—তার
কারণ হয়ত মাথার মধ্যে কবিতা ও গদ্যের ভিতরে এক সজাগ দেয়াল।
অবশ্য আমি হলেম গিয়ে তদোগেন, কী-ই-বা জানি!
***
কবিতার বাকি খুঁটিনাটি
***
—প্রভো, স্ট্রীম অফ কনশাসনেস কি?
প্রভু: কানের গোড়ায় পড়লে, ইউরিনারি
ব্লাডারের আচমকা স্বপ্নভঙ্গ হয়ে অকুস্থল ভিজে যাওয়াই স্ট্রীম অফ কনশাসনেস!
***
সত্যজিৎ রায়, ছোটবেলার স্মৃতিচারণে,
এক ড্রয়িং শিক্ষকের কথা লিখেছিলেন, যিনি বালক রায়ের আঁকা দেখে বলেছিলেন—সইত্যাজিৎ, নামেও সইত্যাজিৎ, কামেও
সইত্যাজিৎ!
উপরোক্ত লজিক, যা রায়বাবু কোনোদিনই বোঝেননি,
অনুসরণ করেই—ইমেজ
ও কোলাজ, এই দুই শব্দ মাত্র ব্যবহার করিয়া মেনস্ট্রীমের আপাত 'ভোলেবাবা' কবি ও
সমালোচক যে কোন কবিতার আলোচনা করিয়া থাকেন।
আমি
অপেক্ষা করিতেছি, উক্ত সমালোচকগণের
তুণীরে, 'স্ট্রীম অফ কনশাসনেস' কবে সংযোজিত হইবে। মূত্রধারাও যে স্ট্রীম এ কথা
মেনস্ট্রীমের জানা দরকার। কনশাস না কানসাস (ডরোথির) তা ফ্রয়েডই জানেন।
***
—প্রভু, পোস্টমডার্ন কি?
প্রভু: ওই মডার্নই,
জাস্ট, পোস্টাপিস খোলা!
***
প্রভাতে গাত্রোত্থান করিয়া চৌধুরী
মহাশয়ের মনে হইল—কিসের যেন অভাব—বড় শূন্য শূন্য দিন। হঠাত দাড়ি জুড়িয়া ইলেকটিরি খেলিয়া গেল, শুঁয়াপোকার ন্যায় দৈববাণী, হামাগুড়ি
দিয়া কর্ণকুহরে প্রবেশিল, উত্তেজিত থরোথরোচিত্তে মহাশয় ফতোয়া দিলেন—জাতিধর্মশ্রেণীবর্ণ
ও হজমশক্তি নির্বিশেষে, পোস্টমডার্ন হইয়া ওঠা বাঙালি জাতির পরমকর্তব্য। বিশেষ
পরিশ্রমব্যতীত, মাত্র তিনশত রুপি ব্যয় করিয়া যে কেহ পোমোস্তর অর্জন করিতে পারেন।
দলে দলে সাহিত্যিক পড়িমরি ছুটিল, সম্মুখ অথবা ডাকযোগ দর্শনে।
কপালপ্রসন্ন
কবিসকল বাড়তি সুবিধাও পাইলেন, যেমতি বিশেষ ভক্তজন বারোইয়ারি পূজায় হিপপকেটে
অকস্মাত নুচি মন্ডা খুঁজিয়া পান—পাক্ষিক
তাত্ত্বিকগণ তাঁহাদের বিরচিত হরিনামসংকীর্তন হইতে লাইন বাই লাইন পোস্টমডার্ন
উপসর্গ তুলিয়া ধরিলেন, বঙ্গভূমে কলেরার দূরীকরণ হইয়া আন্ত্রিক আসিল।
***
উদাঃ
***
আই লাভ আংকেল চিপ্স। কিন্তু, আংকেল
কি আমাকে ভালোবাসে? চিপ্স খেতে বলে, খালি চিপ্স খেতে বলে। সে যদি ভালোই চাইত, তবে
কি গাজর, পেঁপে, লীক যোগে মাটনের স্ট্যু খেতে বলত না! বলত না, চিপ্সে বেদম
সোডিয়াম, নট গুড, নট অ্যাট অল গুড!
আংকেল ভালো চায়, তাই
বলে চতুর্দশপদী, পড়ো, চিপ্স খেতে খেতে, মঙ্গলকাব্য, লিমেরিক, মন্দাক্রান্তা, এই তো
নদের চাঁদ, সিদ্ধি বিনায়ক—কী ভালো যে লেখে—মিত্র অ্যান্ড
ঘোষ, চিপ্স খেতে খেতে, চিপ্স খেতে খেতে, জ্যোতি বা চন্দ্রমুখী, অভাবে নাইনিতাল,
পুষ্কর, লালিমা, সিন্দুরি—
টাকা চুলকালে কৃষ্ণপক্ষে নবাবগঞ্জী।
এত
আলু, এত আলু, আলু পচে পচে, গোডাউনে জেগে ওঠে, মাছি আর আলুর দেবতা, গরিবের সম্বল
বহুজাতীয়তা, এসে উদ্ধার করে, তবেই না চিপ্স ও ভদকা!
***
সরি টু ডিসেপয়েন্ট য়ু— বাট সুরিয়ালিজম আর
সিম্বলিজম এক নয়, যদিও দুটোই আপনার সমান দুর্বোধ্য মনে হয়।
***
আকাশে উড়িছে ছোটা হাতি (ধার
করা), হলো গে সুরিয়াল (ডিজনি যাই ভাবুক)। ভিশ্যুয়াল অ্যাঙ্গেল থেকে। স্পিড বিচার করলে এও
প্রতীকী হয়ে উঠতে পারে, তবে আপাতত থাক। নিচের উদাহরণ বেটার।
আকাশে উড়িছে বকপাতি
বেদনা আমার ছোটা হাতি
এইখানে ছোটাহাতি প্রতীকী। জীবনানন্দ
হলে 'ছোটা হাতির মত বেদনা' লিখতেন, উপমা হয়ে যেত—সুজির নয়।
লক্ষ্যনীয়; বকপাতির লাইটনেসের
সংগে ছোটাহাতির কি অপূর্ব ওজনগত কন্ট্রাস্ট। কবিতা কে কবিতা হলো, আবার ওজোন লেয়ারও
বৃদ্ধি পাইল। এই ওজন ও ওজোন কে মেলানো হলো গে অ্যালিটারেশান। পরিবেশবন্ধু ব্যাপার!
***
প্রথম পুত্র
জন্মাইলো আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে, কবিতাগ্রস্ত পিতা নাম রাখিলেন—মাহভাদর। দুই বৎসর নির্বাহ হইতে
দ্বিতীয় পুত্র ভূমিষ্ট হইল—সেই
বৎসর জুড়িয়া হা হা বর্ষা, নিরন্তর বন্যা— তিনতলার চিল-ছাদে ময়ূরপঙ্খী ভিড়িল, বসতকুঠির
তল নির্ণয় করিতে করিতে পুত্রমুখ দরশন করিলেন নিরংকুশ ঢালি—কহিলেন—অদ্য হইতে বালক তুমি সালভাদর!
হস্তীপৃষ্ঠে
চাঁদ উঠিলো—কহিল,
অনুমতি দাও বাণিজ্যগমনে...
***
জীবনানন্দে মুগ্ধ পিতা, পূত্রের নাম রাখিলেন—জিদান।
উত্তরদেশে কেহ জিদানসন নামে পরিচিত হইল, পুবে সনজীদা। পশ্চিমে ক্লিন্টন, সিলি হইয়া
উঠিতে না উঠিতে বার্চবনে বাতাস ফিরিল, হলুদ বাতাসে রাঙিয়া উঠিল
হেমন্ত—যা যুগপত কুমার ও মুখোপাধ্যায়—আওয়ারা,
বেকরার।
***
আমার ১০-১৫ বছর আগের লেখাগুলোয় কার কার প্রভাব রয়েছে ভাবতে গিয়ে
দেখি, তরুণ অনেকের অধুনালিখিত কবিতার ঋণ সেইকালে স্বীকারই করিনি!
***
এপিফ্যানি আপনি এখনো দেখেননি; নিচে দেখুন
***
পথ
বেঁধে দিলো কেরেন্তাইন গ্রন্থি
হামরা দুজনে ভাপ্পি লাহিড়িপন্থী
—
ই সালা বঙ্গালি
সাহিত্যিক সোব বেসপাট কিচাইন মাল আছে, ইদের বিসোয়াস নাই, কোমলেকামিনী থিকে টুকে
পটলেপাটালি কোরেও সালারা সান্তি পায় না! সান্তি হলো শোভা দে'র সিরিয়াল কিলার
বিটিয়া—কেউ মরলেই সান্তিসোভা হয়। সোভার পোতি বিলাইত গেলেই সাহিত্যিকদের
ধোরে সোভাপোতি বানিয়ে দেয়, ইভি এক সাহিত্যিক বাবু বোলিয়েছেন, সিব্রাম না কী সোব
চকরবকরতি
***
অতঃপর,
মিস্টার বগুলা পাঠক (সরোবরেষু) কহিলেন— হে
পান্ডবাগ্রজ, এই দিনজহান, ভূদুনিয়ায় তর্কবিমুখ নানা জাতি রহিলেও 'তর্কবিমুখ বাংগালি' মাত্রেই আদতে প্ল্যান এ'র প্রয়োগে অকৃতকার্য, প্ল্যান বি'র
সন্ধানরত ব্যক্তি। তর্কবিমুখ বাংগালি ম্লেচ্ছভাষায়
অক্সিমোরন বিশেষ। রৌরব নরকে, পাপীগণের ভর্জননিমিত্ত ডালডা—
যাহা হাইড্রোজিনেটেড বনস্পতি—পুরাতন হইলে, কটাহে
তিনচারিটি তর্কবিমুখ বাংগালি ভর্জন করিয়া লইলেই উত্তম রিফাইন্ডে
পরিণত হয়। এই বাংগালি ছুতা'র সীমা নাই। সুমন চট্টো 'খাতা দেখে গান গেয়োনা' গাহিলেও
ইহারা বলিয়া উঠিতে পারেন— উঁ, পাতা বলেই উল্টে
দিতে সমিস্যে নেই, লতা (মংগেশকরার্থে) কে উল্টে
দ্যাকালে বুজতুম!
***
আনন্দ
মঙ্গল, মঙ্গলম। মানে, মঙ্গলগ্রহে আনন্দের সহিত আপ্যায়ন। রে ব্রাডবেরি
জানতে পারেননি। আমরা, যারা 'দেশিকোত্তম' কে 'দেশিকুত্তোম' বলে ফেলতাম, ৯-১০ বয়সে,
জানতে পারি ৮২-র এশিয়াডের পর। 'স্বাগতম' শব্দটি আকারে ও উচ্চারণে একই জানতাম,
'বা'হুল্যবর্জিত। আপ্পুর গান শুনে বুঝতে পারি, শুদ্ধ উচ্চারণ—'সোয়াগতম'।
এক রোববার, স্কাউটক্যাম্পের পরিদর্শনে আসা প্রধান অতিথি ত্রিশ বালকের সমস্বরে
আপ্যায়িত হন —'শুয়ার খতম'। তাহার পর কী হইল, শ্যামলাল জানিত নিশ্চয়!
***
আমি চেয়ে চেয়ে দেখি
সারাদিন
আজ ওই চোখে ছাগলের শিং
আমি তাইকি ভয় পাইকি
বুঝি মনে মনে পেড়ে গেনু ডিম
***
বাথরুমে যে নাবিক হারায়েছে
দিশা
খয়েরি পানের পিক যখন সে চোখে দেখে সিস্টার্নের গহীন
ভিতর
তেমনি দেখেছি তারে বন্ধঘরে, বলেছে সে—
ইত্তেদিন কাহাঁ থে মিয়াঁ?
—
কেয়া কিয়া কেয়া কিয়া কেয়া কিয়া!
—
সৈয়দ জীবনানন্দ হক
***
আগের পাতার কন্টিনিউয়েশনে যে ডিসক্লেমার দেওয়ার প্রয়োজন ছিল—
***
বিদগ্ধ
রসিকতার আমি কেহ নই। কীইবা জানি! এই যে অগ্রজকতিপয় উদাহরণ দেন শঙ্খ ও অলোকরঞ্জনের পত্রালাপের—পড়িয়া
দেখেছি—মনে হয় দুই বেয়াই সামনা-সামনি বসিয়া চিঠির মাধ্যমে শালীন সংকেতজ্ঞাপনের
নিদারুণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন; রবীন্দ্রনাথ রেফারি—পাঞ্জাবির
হাতা যেন কব্জি (থুড়ি করসন্ধি) হইতে এক মিলিমিটার উপরে না ওঠে।
—
গুণীদের কথা বলিতে গেলে, ভাষাশালীন্য অক্ষুণ্ণ রাখাই
দস্তুর (উপরে দেখুন)।
—
নিজের কথা বলতে গেলে বাল করতুম
***
অ্যালিটারেশন
ও মিসকনসেপশান নিয়ে আপনি অনেক কিছুই জানেন না
***
'এক সে
আকাশ মায়ের কোলে
যেন রবি শশী দোলে'
—
মহাজাগতিক টাগোর ও কাপুর ডান্স শো দেখিয়া নজরুল
***
উর্দু কবিরা 'গম' 'গম' করিয়া হ্যাদাইয়া মরিলেন, কেহ
পান করিতে উৎসুক হইলেন, কেহ গমের বস্তা হৃদপিন্ডে বাঁধিয়া কার্ডিওকসরতে মাতিলেন,
সঠিক উপায় জানা না থাকায় কাজের কাজ কিছু হইল না। সিংহম আসিয়া বাইসেপে পিষ্ট করিয়া 'আটা'
বানাইলে তবে গিয়া মানুষ সিন্নি, পুরোডাশ, পুরী ও পিষ্টক খাইয়া পিত্তি রাখিল।
বাঙ্গালার
মানুষের খাদ্য সমস্যা ছিল না। রবীন্দ্রনাথ মৎস্য খাইতে ভালোবাসিতেন, সখিগণের সহিত
গান ধরিলেন 'ওলো সই, ওলো সই, আমার ইচ্ছে করে তোদের সাথে, মনের কথা কই' (গান
'তেলকই'; পর্যায়: রন্ধন)। এহ বাহ্য, মাহভাদর ঢালির পুত্র
সালভাদর ঢালিরে যে অধিবাস্তববাদের হোতা বলা হয়, তাহাতে নির্যস মণিপুরি গঞ্জিকার
অবদান আছে—শুদ্ধখালসা
বাঙালি মাত্রই অবহিত, রবীন্দ্রনাথই প্রথম সুররিয়াল খানার জনক—শরৎ (চন্দ্র এবং কাল উভয়ই) আসিলেই
রবীন্দ্রোদর হাঁকপাঁক করিয়া উঠিত—আহা
কে ভুলিতে পারে!—এসেছে শরত,
ডিমের পরশ লেগেছে তাওয়ার পরে। তো শরতের আগমণে রবীন্দ্রকলম বাতাসে নড়িল—শরত তোমার অরুণ আলোর চচ্চড়ি
(গ্রন্থণবিভাগ ছল করিয়া 'আলো' কে 'আলু' লিখিয়াছে বটে, মনে রাখিবেন ও বেটাদের
বিশ্বাস নাই—বলি,
মেদিনীতে জ্যোতি ও চন্দ্রমুখী প্রভুত প্রচলিত রহিলেও 'অরুণ' আলুর নাম কোনজন কদাপি
শুনিয়াছেন!)।
আজকাল মৎস্য জনরোচক হইয়াছে, হাইব্রিড জিওল চাষ করিতে
দরিদ্র মৎসচাষী বিরিয়ানি ব্যবহার করেন—মাগুর জী নহিঁ সকতে
তুমহারে বিনা...ইত্যাদি প্রভৃতি...
***
বলতে গেলে,
রবিবাবুই প্রথম কবিতায় শারীরবিদ্যা নিয়ে আসেন, এন্ডোক্রাইন সিস্টেম—'পথ
বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি'—মানে, লাগামবিহীন হরমোনাল
ডিস্টার্বেন্সই সকল সৃষ্টির উৎস।
***
সত্যি
বলতে, রবীনবাবুর চেয়েও অনেক বেশি কনফ্যুজ, গুলজার করে ছেড়েছিলেন।
'একসো ষোলা চাঁদ কি রাতেঁ, এক তুমহারে কাঁধে কা তিল'—আতঙ্ক
বলে আতঙ্ক! চাঁদনি রাতে কাঁধে কাতিল বসে আছে— ভয়
হবে না! মাইরি!
***
'পূর্ণিমার
চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি' হইতে প্রতীত হয় কবি সুকান্ত কভু দক্ষিণ ভারতে যান নাই। উপমা
সে'দেশে প্রাতরাশ মাত্র। প্রতীক, স্মিতার ছেলে। এক রাশিয়ান গল্পে প্রুতিয়া ছিল পেনসিলপুত্র।
রসশাস্ত্রে, নীরস তরুবরের চাইতে শুষ্কং কাষ্ঠং অধিক সমাদৃত, কারণ হয়ত নীরদ সি বলতে
পারতেন। খুশবন্ত কি জানতেন? তাঁর খুশীর কারণ কি ছিল— জানা
যায়নি।
***
একটি সামান্য অক্ষরের হেরফের কী
ভয়ংকর হতে পারে, দীর্ঘদিনের, অস্তিত্ব নিয়ে গড়ে ওঠা চিন্তাভাবনাকে কী'ভাবে
নাস্তানাবুদ করে তুলতে পারে, তা সিরিয়াস মানুষজন স্বীকার না করলেও জোকসাহিত্যে
বিদ্যমান।
এক অসময়ে পড়েছিলুম—সেই প্রত্যন্ত
ক্যাথলিক মনাস্ট্রির বৃদ্ধতম সাধু মনাস্ট্রির তোষাখানায় ঢুকেছেন, ওরিজিনাল (ওরিজিনাল সিন-এর পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে,
ওরিজিনালের ভাষান্তর অকাঙ্ক্ষিত) স্ক্রিপচার পড়তে
(ওরিজিনাল খুব যত্নে সংরক্ষিত থাকত তো, কপি হত একবারই, তার পর কপি থেকে আবার কপি,
আবার...। ক্যাথলিক বলে, চাইনিজ হুইস্পার সম্পর্কে অবহিত থাকবেন না, এ আশা অন্যায়)।
তা, সাধু ঢুকেছেন তো ঢুকেছেন, বেরোন আর না। তিন দিন
ধরে বাকী সন্ন্যাসীরা দুশ্চিন্তায়, তবে সিনিয়র মোস্টকে বিরক্ত কী আর করা চলে, তবু
শেষপর্যন্ত, দুশ্চিন্তাই জেতে, তোষাখানার দরজা ভেঙে ঢুকে দেখেন, বৃদ্ধ হাপুস কেঁদে
চলেছেন, অনেক প্রশ্নের পর জবাব দেন—কথাটা
ছিল 'সেলিব্রেট', কোন হুমুন্দির পুত, কপি করতে গিয়া 'R' উড়াই দিসে!
দেকার্তের Cogito, ergo sum-এ
কজিটোর 'জি' লইয়া পানু সিংহর আজকাল সন্দেহ হয়— কথাটা আসলে —Coito, ergo sum' নয় তো? অর্থাত—I fuck (up), therefore I am…
***
ফলে কনটেক্সট বা পারিপার্শ্বিক জানা জরুরি
***
'ওটা
দিতে হবে..., কহিলাম তবে, বক্ষে জুড়িয়া পাণি'...মাইরি আউট অফ কনটেক্সট এভাবে স্টেটমেন্ট তুল্লে শিরদাঁড়া আতঙ্কে সানাই হয়ে যায়! অবশ্য
তফাৎ তো শেষমেষ
উক্তাঙ্গেই (কবি বলেছেন)
***
কনটেক্সট ব্যতিরেকে স্যুরিয়াল ব্যাপার ঘটে যেতে পারে—যথা, স্টকমার্কেট দ্বারা
বাংলা গানকে কন্ট্রোল করতে শুরু করা—এই যেমন, 'বোঝে না সে বোঝে না' গান বেরুলো আর চচ্চড় করে
ছায়া প্রকাশনীর শেয়ার উঠল!
***
তর্কে বহুদূর।
মানে, শ্রীমান বস্তু বিশ্বাসের সংগে তর্ক করলে বাড়ি-গাড়ি-ফুলদানি কিছুই হবে না।
দূরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করতে হবে প্রতিবেশী কালোভ্রমর পাকড়াশীকে, তার গথিক পোশাক,
কালো লিপস্টিক—তাকে বলে অবজেক্টিভিটি—আঙুর
ফল টক। তার পর ধরুন গে ব্যক্তিত্ব, পারসোনালিটি— টেরি
প্র্যাচেটের সূত্রাণুসারে— গ্র্যাভিটি একদিন
অচানক যদি ব্যক্তিত্ব পায়, আর ঠিক আপনার ওপরই ক্রাশ খায়—
কী হপে! নিউটনের সূত্রগুলি যদি মনোবেদনায় টনটন করে, আপনার পোটেনশিয়াল এনার্জিকে
বিচলিত করার উদ্দেশ্যে, লুকোচুরি খেলিবার ছলে গতি এসে পিঠে ধাপ্পা দেয়! আপনি কি
বলবেন না—ঠ্যালার নাম বাবাজী কর্মকার!
—
বাঙালির সমস্যা হলো, সে মোশনকে ভিসুয়ালাইজ করে লুজ
মোশনে— সে আমাশা ও গোপাল ভাঁড়ের লেগাসি— তাকে
দাও এন্টেরোকুইনল!
—
পৃথিবীর কোথাও কোথাও গ্র্যাভিটির নাম কমল মিত্র
***
নাইপল এক লেকচারে বলেছিলেন— যে কোনো লেখাকে সমৃদ্ধ করে আত্মজীবনী এবং সেন্স অফ হিউমার,
বাংলায় রসবোধ আর কি। এ কথা নাইপল নাও বলে থাকতে পারেন। তবে নোবেল-ইত্যাদির
প্রাপকদের ওপর যে কোনো ব্যক্তিগত কন্সট্রাক্ট আরোপণে দোষ নেই—হেমিংওয়ে বলেছেন।
***
রসবোধ রিভিজিটেড: রসবোধ সম্পর্কে যে ধারণাগুলি আপনি একদমই
রাখেন না—
***
বাঙালি
হিসেবে আমার সবচাইতে গর্বের ব্যাপার হলো, বাঙ্গালির অটল সেন্স
অফ হিউমার। মহারাণা প্রতাপও মেনে নিয়েছিলেন—সে জিনিস
চিত্তৌর কেল্লাদপি দুর্ভেদ্য। বাঙ্গালির জন্য, যে কোন চুটকুলাকে প্রথমে নিউটনিয়ান লস
(loss নয়) অফ গ্রাভিটির বশবর্তী হয়ে, তাগড়া তন্দুরুস্ত হয়ে উঠতে হবে, এবং একই সঙ্গে
কেমিক্যাল প্রপার্টি হিসেবে ডালডাকে ডিহাইড্রোজিনেট করে রিফাইন্ড তেলে পরিণত করার ক্ষমতা
আয়ত্ত করতে হবে।
—
এই মালটা ইংরেজিতে দাঁড়াত ভালো, বাংলায় লেম হয়ে গেল
—
দ্য মোস্ট অফেন্সিভ থিং ইয়ু ক্যান টেল আ লেম জোক, ইজ টু এডভাইস ইট টু পুট ইটস বেস্ট ফুট ফরোয়ার্ড—since the joke has
attained physicality by now, it amounts to body-shaming.
—
যাঁরা বনস্পতি ও রিফাইন্ড নিয়ে ধন্দে পড়লেন— পেটের চর্বি, কাতুকুতু,
ও কোলেস্টেরল নিয়ে ভাবতে পারেন
—
'I can calculate the motion of heavenly bodies, but
not the madness of people.'—জনশ্রুতি, নিউটন এই আপ্তবাক্যর জন্ম দেন শেয়ারবাজারে বিস্তর ঝাড়
খেয়ে—ফলে, একে আউটকাম অফ Newtonian loss of property—ধরা যেতে পারে।
—
এইযে এতগুলো ছোট ছোট লেম
(খোঁড়া) জোক, একত্র
হয়ে এক প্রায়গোদা চেহারা ধারণ করল—এ হলো, নিউটনিয়ান ল'স অফ
গ্রাভিটেশানের ফল। যা কাছাকাছি জিনিসকে একত্রে এনে নিউক্লিয়েশান-এর মাধ্যমে বড়সড় করে
তুলতে পারে।
—
এই প্রসঙ্গে কোয়ান্টাম ফিজিক্স বোঝানোর লোভ ছাড়তে পারছি না।
দেখুন, সহজে কোয়ান্টাম ফিজিক্স বোঝার একমাত্র উপায় হল এমন এক অস্তিত্বের কথা
কল্পনা করা যা যুগপৎ কমল মিত্র ও রবি ঘোষ।
—
নিউটন যে আদতে বাঙালি ছিলেন, এই
কথাই বোঝানোর চেষ্টা করছিলুম—
ইনারশিয়া যে আসলে ল্যাদ, স্থিতির আর গতির, আর বাংলা গান যথা—নদীর যেমন ঝরনা আছে/ ঝরনারও নদী আছে—কে ডেরিভেটাইজ না করলে কী আর একশন
রিয়্যাকশন দাঁড়ায় (ফেসবুক বাদ দিলে)!
পানু সিংহ বললেন, কেন
বাপা, তোমার নিউটন কি টনটন কর্চে? ফোন রেখে দিলেন।
বোঝানোই
হল না, একই নজরুলগীতি—চিরদিন
কাহারো সমান নাহি যায়—
থেকেই কীভাবে গ্রাভিটি আর তাপবিদ্যার এনট্রপির জন্ম!
—
New town, the place where Apple discovered gravity!—পৃথিবী যে কলকাতার চারদিকেই ঘোরে, তা
বোঝানোর জন্য এই এক তথ্যই যথেষ্ট। তবে এর সঙ্গে রসবোধের সম্পর্ক নেই। আপেল যে
রসসিক্ত, সে কি আপেল জানে? গ্রাভিটিও জানে না।
***
বাংলা কবিতা ও গানে ভিনভাষার প্রভাব, যা নিয়ে, আপনার কোন
ধারণাই নেই—
***
উদাঃ ১
—
দস্তয়েভস্কি বলেছিলেন—'উই অল কাম ফ্রম গোগোল'স
"ওভারকোট"'। বাঙালিমাত্রেই ভাবেন, তাঁহাদের জন্ম রবীন্দ্রনাথের
আলখাল্লার ভিতর—
'শীতে উপেক্ষিতা'র রঞ্জন হইতে 'শীতে অনাবৃতা' রঞ্জনের অবস্থান মধ্যে যে বিশাল
স্পেক্ট্রাম (বর্ণালীকে বিশাল বলিলে বডি শেমিং হয়), তাহা এক্সপ্লেন করা যায় উক্ত
জোব্বার ভিতর অন্তর্বাস হইতে দূরত্বের ভিত্তিতে, মিলিমিটারে মিলিমিটারে রঙের ফারাক।
বাঙালি যা জানিতে পারে
না, তাহা হইল, অধিকাংশর প্রস্ফুটনই পেঁচো কবিদের চাড্যান্তরে সম্পন্ন হইয়াছে, কভু
একমুখী বিষফোঁড়া, কভু বহুমুখী কার্বাংকল। সেই সব কবি,
যাঁহারা অন্ত্যমিলোপলক্ষে মা'মাসীমার সহিত হিরোশিমা, মাখামাখির সহিত নাগাসাকি-র
অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটাইয়া থাকেন।
এই কবিগণ কী কম ক্ষমতা ধরেন!
কেমিস্ট্রি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে এনাদের জাঙিয়ার ফ্লেম টেস্ট হইলে
ধাতুপ্রাচূর্য্যে টাটাও মোহিতলাল হইয়া ওঠে। শক্তিমান আসিয়া ট্রেনের সহিত
'অনাবশ্যক' হার্ট ক্রেন না মিলাইলে, ক্রেন সায়েব বঙ্গবিশ্বে নোবেল পান কী উপায়ে?
যাহা হউক, কথা হইতেছিল
জাপান দেশ লইয়া, আজ বঙ্গ যাহাকে 'জাপানি তেলের' কারণে চেনে, যদ্যপি সে দেশে
শিশুজন্মের হার সংকটজনক। আগে এক সময় ইকেবানার সূত্রে চিনিত। আর গ্যাবার্ডিন। দো দো
আনা।
বিস্তর গবেষণার পর পানু
সিংহ অবজার্ব করেন, পুরাতন গানের সূত্রে ইন্দো-জাপান মৈত্রীর পুরাকালিক নিদর্শন
মান্য, অবশ্যমান্য—
'কুসুম দোলায় দোলে সামুরাই', 'ভালোবেসে সুশি খেতে বলো কে না চায়, রাধা সুখী হয়েছিল
পেয়ে সামুরাই', ইত্যাদি প্রভৃতি।
***
উদাঃ২
—
অনিল কাপুর গ্রান্ড পিয়ানোতে ডাঙস
মারিয়া গাহিয়া উঠিলেন—
জিন্দেগি হর কদম এক নই জংগ হ্যায়ঁ।
ভাবি, বেড়ে দেহতত্ত্বের
গান তো—বয়স
হলে গাঁটে গাঁটে মরচে লাগেই, স্টেপে স্টেপে বোঝা যায়— দেহতত্ত্ব, তাও আবার ক্রাচ নিয়ে,
সঙ্গে থাকলেই অতিক্রম—জীত
জায়েঙ্গে হম, তু অগর সঙ্গ হ্যায়।
গানটি নেপালে খুব একটা
চলেনি। ওখানে পালে পালে সহস্রাধিক জং বাহাদুর তো, মরচে দিয়েই বর্ম বানাতে
পারদর্শী, বয়স ওঁদের কী-ই-বা উৎপাটিবে!
—
বারোটা বাজিলো, কাক্কুঘড়ি হইতে মুখ বাড়াইয়া পাখি
বলিলেন—থুক্কু...
***
উদাঃ ৩
—
শুদ্ধ ভাষায় বলে—'ঘঞ্জস্য বড়্গ, বড়্গস্য বাউল'। এ
হলোগে চাইনিজ ঐকিক নিয়ম—খঞ্জ
যদি খোঁড়া হয়, ঘঞ্জ তবে কি? খড়্গ যদি খাঁড়া হয়, বড়্গ তবে কি? চাউল যদি চাল হয়,
বাউল তবে কি? ওয়াসেফার জামান শিকিয়েছিল, সাল বোধ হয় ৯২-৯৩. চন্দরবিন্দু দু'চার
পাতে নয় বেশিই পড়ল!
তা, সে বছর হরিহরণের
প্রথম গজল অ্যালবাম, এহদে মস্তি হ্যায়ঁ, লোগ কহতে হ্যায়ঁ। পৌষমেলায় শিক্ষাভবনের স্টলে
আমিই এনে চালিয়েছি, তারস্বরে। কতিপয় সুবেশা মধ্যবয়স্কা এলেন, কপালে ডলারসাইজ টিপ,
খোঁপায় টগর। এসেই হুজ্জোত—'লজ্জা
করে না, পৌষমেলার পবিত্র অঙ্গন কলুষিত করতে' (একদম এই ভাষা)! আমি তো পপাত চ। রক্ষে
করলে হাবল (এই হাবল টেলিস্কোপ বানায়নি, তবে এই হাবলকে বানাতে টেলিস্কোপ ব্যবহার
করা হয়েছিল—
দূরদর্শিতারকথা বলছি আর কী!)। হাবল তখন গাঁজায় সিক্ত, ধেনোয় কেলাসিত, শান্ত ভাবে বললো— 'দোর বাঁড়া, শেক্সপিয়ার পড়েননি? জানলা দুদিকেই খোলা রাখতে হয়, একদিক দিয়ে মশা ঢুকবে, তবেই না অন্যদিক দিয়ে বেরোবে...'
***
জিওগ্রাফি-ভিত্তিক নস্টালজিয়া (ইংরাজী
শোনালেও আসলে ব্যাপারটা বাংলা) নিয়ে আপনি যা জানেন না—
***
স্মৃতিস্পৃষ্ট
বাঙালির কথা বলতে গেলে, বর্ধমানের অবস্থান বাংলাদেশ ও কলকাতার ঠিক মাঝখানে। কলকাতায়
যা মেমোরি (অফিসিয়াল), বাংলাদেশে ম্যামারি (স্মৃতি ও আবেগের জ্যুটমিল আর কী)। মধ্যস্থলে
মেমারি ও তার সম্পন্ন আলুর গুদাম!
***
বাংলা কবিতায় ডুয়ালিজম নিয়ে আপনার কি ধারণা
রয়েছে?
***
বঙ্গসুশীল: এমার্জেন্সির সময় শঙ্খ
বাবু কী প্রতিবাদটাই না করেছেন, পুলিশও বোঝেনি, আমলাও না, সম্পাদক, প্রুফরিডার,
লেটারপ্রেসের হরফচোর, কেউ না! প্রতিবাদের মত প্রতিবাদ বটে। কী সুললিত, কী
গাম্ভীর্য্য, কী মনকেমন! আহা!
বঙ্গদুঃশীল: কেষ্টদা কি
দিলো, আটানা কিলো। কেষ্টা লিখলে শঙ্খ ফংখ হাপিস হয়ে যেত। পুরাতন ভৃত্য কাকে বলে
দেখিয়ে দিত!
***
কবিযশোপ্রার্থী হলে যে ধরণের জনসংযোগ করা উচিৎ
***
উত্তরবঙ্গের
সাহিত্যিকদের একটা ব্যাপার লক্ষ্য করি, বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইউনিক। নিজেদের
হাত ধরে রাখা, পরস্পরকে প্রোমোট করা। মেদিনীপুর, চব্বিশ পরগণা, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান
যেদিকেই যাই কবি/সাহিত্যিকরা কলকাতার পরিচিতি কামনা করেন, এবং নিজের আঞ্চলিক পরিচয়
থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক সময়ই মূলাঞ্চলের সঙ্গীসাথীদের ঝেড়ে ফেলেন (পুরুলিয়া একটু আলাদা)।
উত্তরবঙ্গের শিল্পীরা যে কলকাতার পরিচিতি চান না তা নয় তবে শেষমেষ তাঁদের এলিজিয়েন্স
যে উত্তরবঙ্গের প্রতিই এটা মনে হয়। এঁরা, ভিনজেলার কিন্তু উত্তরবঙ্গে জীবনের কোনো সময়
কাটিয়ে যাওয়া শিল্পীদেরও আপন করে নেন। এইসবই আমার মনে হওয়া কথা, চোখে যা পড়ে তার থেকে
আন্দাজ করে নেওয়া। ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী, তবে আক্রমণ করতে ইচ্ছে করলে প্লিজ ভেবে দেখবেন,
১৯৯২ সনে আমি একবার দার্জিলিং গিয়েছিলুম।
***
কবি গজ্জন করে বোল্লেন—খবদ্দার, মেদিনীপুরের নাম নেবেন্না
বোলচি, আমি কোল্কেতার, বিসুদ্দ! জন্ম-মিত্যু-পটি-আন্ত্রিক! সব!
সঞ্চালক ঘাম মুচতে
মুচতে বলেন—সি
কি! মেদিনিপুর কি ওপরাদ কল্লে, আমি নিজেই সেখেনকার, তুমি তো পাড়ার ছেলে, তোমায়
আচমকা পর করি কেনো!
বার্তালাপের গতি দেকে,
তক্কচোঞ্চু বোলিলেন—পুরো
মেদিনীই তো মেদিনীপুর, বাছা, বীরসিংহও
(হুগলি নিয়ে তর্ক বাঞ্ছনীয় নয়) পাবে কটলেটও পাবে। এমোন্তরো
ভ্যানতাড়া কেন? ভ্যান ভাড়া চাই? হ্যাঁ ওবেসিটি হলে ব্যাপার আলাদা, মেদ কম করিতে
কুলেখাড়া খাও, একা একা কুলে খাড়া থাকলেও আর দোকা
দেখাবে না!
ঝঞ্জার বিরাম না দেকে মেকলে সায়েব
খোদ এসে সমাধান
দিলেন, তবেই না! মেকলে বলিলেন—
দ্যাক ড্যাকরা! আমি নিউট্রাল, বোথ মেদনিপুর এন্ড কোল্কুট্টা। আজ হইতে টুমার জন্ম
ম্যাকলাস্কিগঞ্জে। ম্যা থাকিল, কোলকেও পাইলে, এক্সটিকও হইল, মেদিনিপুর ও কোল্কাতা
বোথ রহিল। শীতকালে স্কি করিতেও আর বাধাবিগ্রহ থাকিলো না! খুশ! এই লহ, তালক্ষীর
ভক্ষণ করো, গতকাল মেকুরে মুক দিয়াচিলো।
—
পরিশিষ্ট: কথাটা ছিল—বিনা
যুদ্ধে তরে আমি ছুঁচাইতে দিমুনি— মগ কাড়াকাড়ি আর কী। তবে
কবিদের কথাই আলাদা, সুচাগ্র মেদিনীপুর না কী যেন লিখে ফেলল।
***
আইনানুগ
ভাবে কপিরাইট লঙ্ঘন করা নিয়ে যা যা আপনি জানেন না
***
বাদশা বলিলেন, গরীবের প্রয়োজন কি
রতনে?
রতন কাহার? না, বাদশাহের।
বাদশা বোঝেন নাই,
গণতন্ত্রে, লিখে দিতে হয়, বিশেষত এই ভুবঞ্জদড়ো সভ্যতার জগজ্জোড়াজালে। সলিল যখন
চৌধুরী ছিলেন, তখন রুমানিয়ান মার্চপাস্টের সুর ভ্লাদ দ্য ইম্পেলার ব্যতীত আর
কাহারো বিশেষ জানা ছিল না, ফলে দিল তড়প তড়পে মানুষের আপত্তি হইল না। সলিল, সলিল
পার করিয়া ডাঙায় উঠিলেন, অন্নু ও প্রীতমের সমাধি হইল (রেজারেকশানও, সে অন্য গল্প)।
অথচ বাদশা বুদ্ধিমান হইলে—একাধিক সোর্স হইতে গ্রহণ করিতেন—ল্যাঠাও চুকিত, স্যাটাও ভাঙিত না।
উদা: নীল আকাশে কে
ভাসালে গেঁদাফুলের মালা-
দু'জনাই কনফ্যুজ, রবি ও
রতন
***
সমান্তরাল
কবিতার জগতে আপনার প্রবেশ হোক এই মুচলেকা দিয়ে—‘আমার সমস্ত লেখা সি আই এ লিখেছে—
***
(সমান্তরাল এক লাইনের কবিতা ও তার শ্রেণীবিভাগ)
***
চিকি পাঙ চিকি পাঙ চিকি পাঙ বাঙ
(মিউজিকাল)
—
লদে কি লিমাই এলো, পেরু, বলিভিয়া—কেন
বা সে সিলভিয়া প্লাথ (হান্তর্জাতিক)
—
গুপ্তরোগ ভাসিছে আকাশে (সুড়সুড়িমূলক)
—
মদন—অতনু,
তার কেন অতনুনু? (অ্যালিটারেশান)
—
ফুলবনে বগা কাঁদিল না (প্রান্তিক)
—
করবটেঁ কেন বদলাও— সখী, বালিশ বদলো (মুশকিলাসানমূলক)
—
ফুলদানে কমল গুরুং আর বিবিধ মশলা (পলিটিক্স ও সয়াসস)
—
নিয়তির ইয়েতি, তুমি কি হরিণ! (আগমার্কা মিস্টিক)
—
ক্লোরোফিলে সে ফিলিং কই (নস্টালজিক)
***
***
ইয়েতি সম্পর্কিত যে সিনেমাগুলি
অবশ্যই দেখবেন—
ইয়েতি ট্রিলজি:
ইয়েতির ইয়ে (প্রেমপর্ব)
ইয়েতির নিয়তি (ফ্যাটালিস্টিক পর্ব)
ইয়েতির মেয়েটি (উত্তরপর্ব)
ঘিয়েভাজা ইয়েতি (অক্ষম সিক্যুয়েল)
ইয়েতির আরাফত (মধ্যপ্রাচ্য এডিশন)
ইয়েতির ইয়েটি (সেনসরড: A)
ইয়ে কউন তি (সাসপেন্স)
ইয়েথির মেথি ( অন্ধ্রা)
আমার সাসকোয়াচ কোচোয়ান (U/A)
ফুটফুটে বিগফুট (U)
***
এবার একটু ব্যক্তিগত
***
যারা
কম্পারেটিভ এন্ডোক্রিনোলজি নিয়ে কাজ করত, তাদের দরকার ছিল ব্যাঙ, রানা ডাইবস্কি,
প্রচুর—বর্ষার
রাতে ধরতে বেরোতাম, টর্চ, বস্তা আর জাল নিয়ে গ্রুপ-নির্বিশেষে, পরের দিন হাজারে
হাজারে ব্যাঙ গিলোটিনে—হাইপোথ্যালামাস
আর পিটুইটারি আলাদা করে স্টোর করা হত। জিনোপাস, যা একমাত্র দাঁতাল ব্যাঙ, আফ্রিকান
ক্লড ফ্রগ, আসলে না টোড না ফ্রগ, থাকত চৌবাচ্চায়, ওরা ক্যানিব্যাল। কথাটা অবশ্য
স্রেফ ব্যাঙ নিয়ে নয়। ইউ মিয়ং শিক, যাকে বাংলায় খ্যাপা বলতাম একদিন ব্যাঙের মেটিং
এর ছবি দ্যাখায়। এমন নয় যে মেটিং চোখের সামনে
দেখিনি, তবে খ্যাপা ছবি দেখায় এবং আমাদের বিবাহিত 'হিয়ং' অর্থাৎ দাদা, স-ইয়ং-উ- কে
দেখিয়ে বলে একমাত্র হিয়ং-ই রোজ রাতে এই একই পোজিশান...। পুরুষ ব্যাঙ থেবড়ে বসে
থাকে মাদার নিতম্বে। ইয়ার্কি হিসেবে ব্যাপারটা মিটে যেতে পারত, পারেনি ব্যাঙের
প্রজননবিদ্যা কিছুটা জানায়। ব্যাঙের নিষেক এক্সটারনাল, অর্থাত দেহের বাইরে। পুরুষ
ব্যাঙ তার উরু ও থাম্ব প্যাড দিয়ে চাপ দিয়ে মাদাকে ডিম পাড়তে সাহায্য করে, থকথকে
জেলির মত ডিম। ডিম বেরিয়ে আসলে পুরুষ তাতে স্পার্ম ছাড়ে। এর বেশি এখন বলার প্রয়োজন
নেই। যেমন এও বলার প্রয়োজন নেই, ইয়ং-উ, আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার ওয়ান ধার করে, ফেরত
দেয় না, আমিও চাই না, এবং যখন তার অবস্থা ফেরে, সে আমায় দিনের পর দিন তার
স্ত্রী-পুত্রের সাথে রেস্তোরাঁয় নিয়ে গিয়ে খাওয়ায়, আর আমার জন্মদিনে একটি জাংগিয়া
গিফট দিয়ে খ্যা খ্যা করে হাসে। যাক, কথা হচ্ছিল এক্সটারনাল ফার্টিলাইজেশানের,
অর্থাৎ ব্যাঙ আপাতদৃষ্টিতে রমণ করে, কিন্তু প্রবেশব্যতীত।
কবিতা আমার কাছে এখন সেরকম। যখন
সিরিয়াসলি লিখেছি, প্রজেক্ট বানিয়ে ১-১.৫ বছর একটা ফ্রেমওয়ার্কে প্রবেশ করে রয়ে
গেছি, মাথায়। এর পর আরো মাস ছয়েক ধরে লেখাগুলো খাতায় নেমেছে। আজকাল বিক্ষিপ্ত
লিখি, প্রবেশ না করেই। ফলে আজ সকালে উঠে যদি মনে হয় ভালোবাসা কবিতাকে ক্যাতক্যাতে
করে তোলে, তবে রবি ঠাকুরের সমস্ত গান জোলো লাগে, লেখায় মরিচ বেশি পড়ে। কাল যদি মনে
হয়—ভালোবাসা
ছাড়া আর আছে কি? সুখেন দাসকেও সেদিন আত্মীয় মনে হয়। ব্যাপারটা এরকমই খাপছাড়া আজকাল।
তবে নোট করবেন এসমস্তের মধ্যেও কমন কবিতাই।
এ'লেখাকে যাঁরা কবিতা
বলবেন না, তাঁদের জীবনে ওরিয়েন্টেশান-নির্বিশেষে কেবল ড্রাই হাম্পিং লাগু হোক।
***
অর্গানিক বিষয়ে যা যা সিলেবাসে নেই—
***
অক্ষরবৃত্তে,
উপনিবেশ হোক আর প্যান্টির বিজ্ঞাপণ সমস্তই অর্গানিক লাগে। আমি, যে ক্লাইম্যাক্স চাই
না—ফোরপ্লে শুধু— সেও অব্দি কন্ডোমে ব্রেইল
লিপিতে অক্ষরবৃত্তেই পদ্য লিখে দিই। ডটেড কন্ডোম। কন্ডোলেন্স লিখি, এপিটাফ, এগনি কলাম,
ফিরে এসো ফিরে এসো ক্ষমা দিয়ে কোরো না অসম্মান...।
***
‘চার কাহার মিল মোরি
ডোলি সজাই রে’...
—
গোমতীর চরে র্যালিস্থল আর মাদ্রাসার ছেলেগুলি সাদা পাজামা-কুর্তা ক্রিকেট খেলছে।
এক কোণে শিমুলের গাছ, সে কি জানে, ফুল ফুটুক আর না ফুটুক সে বেমানান। বেমানান তাই
যা অর্গানিক নয়। আর অর্গানিক হতে চেয়েও যে আমি প্লাস্টিকের বস্তা থেকে মুঠোমুঠো
ইউরিয়া নিজের লেখায় ঢালি, লোকজনকে বলতে পারতাম একে একে পেচ্ছাপ করে যাও, অথচ বলি
না, কারণ প্রস্রাব তো ইউরিয়া মাত্র নয়, সে এক অ্যাক্ট, ডিফায়েন্সের। আর অন্যের
মাধ্যমে নিজেকে ডিফাই করা কাজের কথা নয়। চার কাহার ডোলি উঠালে, আপনা বেগানা হলে, দূর দেখা যায়, কাছও দেখা যায়,
পরিষ্কার ক্রীস্টালের মত, তাই আজকাল অভিযোগ তুলতে পারি না—যা বলছি আর যা বলতে চাইছি তা এক নয়।
রাত্রের দিকে তোমার মুখে ভিন্ন
ভাষার গন্ধ টের পাই। নিজের মুখেও।
***
তার পর কি-যে হলো— গান শুধু গান
***
অনেকটা
অভেদ্য দেয়ালে ফাটল খুঁজে নেওয়ার মত কিছু—যে’টুকুকে আশ্রয় করে অশ্বত্থের চারা।
ক্ষুদে চারা, যাকে
বীরুৎ বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়, তার পেল্লায় গুটিকয় পাতা—যেন হাওয়া এলেই ঝাপটাবে আর উড়ে
যাবে। আর অশ্বত্থ যখন বৃক্ষ, তার পাতা ছোট হয়ে আসে—চাইলেও উড়তে পারবে না। ব্যাপারটা অশ্বত্থ নিয়ে নয় যদিও, ওই দেয়ালে
গজিয়ে ওঠে চারা নিয়ে—লেখালিখি ওরকমই, রিয়েলিটি নিয়ে যে পারসেপশানের দেয়াল গড়ে
তুলেছ তোমার চারপাশে, যার গায়ে টেক্সটবুক দেখে গাছের ছবি আঁকা, মানুষের, জাহাজের,
পেয়ারা, আপেলের, জাতিবাদ, বর্ণবাদ, সেন্সিটিভিটি, দাঁতব্যাথার—অব্যর্থ ছবি সব—যা’র যথাযথতা
নিয়ে এই মুহূর্তে প্রশ্ন করার জায়গাই নেই—সে’সবের গায়ে একপোঁচ ভালনারেবিলিটি দাগিয়ে দেওয়া।
তারপর জ্বীন আসে, ইফ্রিত আর
কী—আগুনের জীব, তার সানগ্লাস খুলে আমাকে দেখায় আগুনের
হ্রদ—বকাবকি করে কেন অশ্বত্থের কথাটা সেভাবে আর্গ্যু করিনি—ফলে সে কথায়ও আসি—চারা অশ্বত্থের পেল্লায় পাতা—কারণ সে নেসেন্ট, নাইভ—তাকে উড়ে যেতে দাও। যে উড়ছে, তার কি আর মাটির সঙ্গে, রিয়েলিটির সঙ্গে সম্পর্ক
নেই? যত উঁচু উড়ুক কবিতা তার ছায়া মাটিতেই পড়ে।
***
ব্যাপারটা
এরকম, হয়ত ঠিক এরকম নয়—তবু… ছবি আঁকতে হলে, রং-তুলি, স্কেচ পেন, চাইনিজ ইঙ্ক, ধ্বনি
গড়ে তুলতে হলে মন্ত্রোচ্চারণ, গান—এসব
প্রকরণ ব্যবহার করা যেত—কিন্তু এই যে
লিখছি, এটা তো আর ছবি আর ধ্বনির ব্যাপার নয়—আমি
মুখ ভেঙাব আর অন্ধ মানুষজন তো দেখতেই পাবে না, কালা মানুষেরা তো শুনতেই পাবে না।
ব্যাপারটা এরকম যে আমি, যে প্রিভিলেজড আর
সংখ্যাগরিষ্ঠদের দলে পড়ি—মানুষ ছাড়া আমার আর
কোন পরিচিতির প্রয়োজন তো নেই। ফলে, কী হয়, লেখালিখি হলো— নিজের চারপাশ থেকে পেতলের তকমা খসিয়ে ফেলা, প্রিভিলেজের,
গরিষ্ঠতার কম্ফোর্টগুলো খসিয়ে ফেলা—আর
ভীষণ একা হয়ে যাওয়া—যাতে নিজের প্রতিই
করুণা উদ্রেক হতে থাকে, আর অন্য এক সত্ত্বা এসে বলে—ন্যাকা!
একাকীত্ব আমার
ব্যক্তিপরিচিতি যদি হয়, তার মধ্যে উদাসীনতা কীভাবে আঁটবে? তাই উদাসীনতা রোজ বিকেলে
বেড়াতে যায়, তার কুকুরের নামও উদাসীনতা, আকাশের দিকে মুখ তুলে ফুটপাতে পায়খানা
করে, হয়ে গেলে শোঁকে, আবার শেকলে টান ধরে—উদাসীনতা
আমার হাতের পোস্ট-কার্ড—কেউ লিখেছিল, ভালো
থেক—ইতি…। আমি সেই ভালো
থাকা দিয়ে পরিপাটি ন্যাড় তুলে আস্তাকুড়ে ফেলি।
তুমি কী বলবে,
আমি তা নিয়ে তো আর বিব্রত হতে চাইব না। বরং বেড়াতে এলে, রিক্সার ভাড়া দেব, গেট
খুলে দেব, চা না কফি না কড়া কিছু জিজ্ঞেস করব—ব্যাস
এটুকুই…এসবের সঙ্গে লেখালিখির কোন সম্পর্ক নেই।
***
হৃদয়,
গোলাপ, লহু, রক্তাক্ত, রক্তিম, ক্লোরোফিল ইত্যাদি শব্দ বাংলা কবিতায় সচরাচর আমার ভালগার
লাগে, 'বাল', 'বোকাচোদা' ইত্যাদি তেমন লাগে না। নিছক সেনসেশনালাইজেশানের উদ্দেশ্যে
এ কথা বলা নয়। হৃদয় ইত্যাদি শব্দের অসতর্ক ক্লিশেড মোটাদাগের ব্যবহারই এর কারণ, পক্ষান্তরে
'প্রোফানিটিজ' কবিতায় বসানোর আগে ট্যাবু ভাঙতে হয়, জন্ম থেকে মাথায় দাগিয়ে দেয়া 'এস্থেটিক্সের'
ধারণা, সতর্কতার প্রয়োজন হয়, পরিশ্রম লাগে।
***
শেষ পর্যন্ত কথাটা এরকমই দাঁড়ায়—আমাদের পোয়েটিক্স আসলে আমাদেরই মত
আটপৌরে। যেমন, আমাদের কবিতারা—এত
গয়নাগাটি সত্ত্বেও ভারী, জবুথবু এমনকি বেমানানের সামনেও বেমানান। অথচ আমাদের কবিতাভাবনা নিয়ে
কথাবার্তাগুলো উজ্বল হতে চায় লোডশেডিং-এ ব্যাটারি-পাওয়ার্ড ল্যাম্পশপের মত। এরকম
এক ল্যাম্পশপ ১৪ বছর আগে আমি ৭৪০ নম্বর বাসে ফিরতে ফিরতে দেখেছিলাম। বরফে ছেয়েছিল
চারদিক। পাইনজঙ্গল লাগোয়া লাল, তুঁতে এনামেল বাড়িগুলো ঝিমিয়ে পড়েছিল। বাচ্চাদের
প্লাস্টিকের স্লেজগুলোও আর দেখা যাচ্ছিল না। একা এক ল্যাম্পশপ স্বার্থপর, কোনোদিকে আলো না ছিটিয়ে, নিজেতে সম্পৃক্ত
দাঁড়িয়ে ছিল। আমি নিজের পোয়েটিক্স ঠিক ওরকম দেখতে চেয়েছিলাম—আইসোলেটেড সিস্টেম— অন্তত যতক্ষণ কাচের দরজায় কার্ডবোর্ড
লাল নোটিশ ঘুরিয়ে 'ওপেন' না করছি।
ওপেন, কথাটা আমার বেশ সংকটজনক লাগে।
কতবার গ্লোসাইনে ওপেন লেখা দেখে অন্ধকারে তলিয়ে গেছি, ঠিক যেমন কবিতারা মানুষের
চোখ দিয়ে ঢুকে যায় এক অন্ধকার কুঠুরিতে, তারপর স্যাঁতস্যাঁতে ঠান্ডায় তাদের আঙুল কুঁকড়ে
যায়, কানের ভেতর মোম ঢেলে সিল করে দেয় কেউ, আর জিভ শুকিয়ে কালো হয়ে যায়—কবিতার এরকম পরিণতি আমি তো অন্তত
ভাবতে পারি না—
তাই আবার লিখি, অন্য একটা কিছু—
ভাবি সে কোনদিন আখরোট কাঠের ব্যালকনি থেকে দেখতে পারবে— বাচ্চারা ঝাঁপিয়ে পড়ছে বরফে, তাদের
ফ্লুরোসেন্ট জ্যাকেট, মোটা টার্কিশ কাবাবের গন্ধে তেলচিটে হয়ে উঠছে দরজার হাতল। যা
কিছু জীবন্ত তার মুখে মৃত মানুষজনের মুখোস পরিয়ে পরিচিত করে তোলার চেষ্টাই তো শুধু
কবিতা নয়—
কবিতা তো পরিচিত ভাষায়
ক্রমাগত দেখতে দেখতেও নিজেকে কিছুতেই না চিনতে পারাও।
***
...অতএব প্রাচীন ট্রম্ব্যুদ্বীপের টিউনিফর্ম
শিলালিপি হইতে অনূদিত নিম্নলিখিত দিয়ালগ আমাদিগের পথনির্দেশক—
***
পরম X-এ কহে চরম Y— Z কিছু দাও প্রভো— গৃহে রাইন্ধা খাই। দার্ঢ্যটুপ,
মর্ষচ্ছেদ, যুপরন্তু ঈড়া, নপ্লবৃত্তি, ঘট্রমানে কেন দেয় পীড়া? কেনই বা
ছিপ্রতন্ত্রে প্রাণী সাজে ন্যষ্টু, মনঃট্রিংকা ঘেরে তারে বিপুল ফু-মাঞ্চু? আর কেন
প্রতিলিম্বো ভূপাতরে দান—হুজু
কার মাতা আর কারই বা সন্তান? কার অম্ভ বিধাবিদ্র ঢিপেমুকুখানি? যশোযবা রসু কেন
শাঁকালুঘরণী?
এক্সে জাগিয়া ওঠে তীপ্র
রীরিং, চীমাংগল্য কন্দবিঘ্ন তন্নিষ্ট পিড়িং!
***
মুখশুদ্ধি:
তদোগেন গিরতের অল্টার ইগো কবি পানু সিংহ-র সাক্ষাৎকার
***
পোতিদিন তব গাথা গাব হামি সুমধুর
তুমি দেহ মোরে তাড়ি, তুমি দেহ চানাচুর
—
নোবেল কমিটির প্রতি পানু সিংহ
***
সঞ্চালক—আজ আমরা কবিতা আড্ডায় বিশিষ্ট কবি ও
সাহিত্যিক পানু সিংহ-র কথা শুনব। তা পানু বাবু, আপনার জন্মের কথা পাঠক জানতে চায়।
পানু— সে উনিশশো বাহাত্তুরে, যখন
কৃত্তিকারা প্রকট, এবং অরুন্ধতি আরসা মেজরে। অগ্নিদেবের অগ্নিমান্দ্য, এবং বাঙালি
আন্ত্রিক ও টাইফয়েডে বিভেদ করতে শেখেনি, শুধু ইনডিটারমিনেটলি হাগছে, সেই সময় ইয়ে
মানে জটিল অরণ্যদেব সহজিয়া সাধনা কর্তে মর্ত্যে মানে সুন্দরবনে ঢেঁকিশাক দিয়ে
কোকিলের কিমা...
—দাঁড়ান দাঁড়ান, এ তো প্রায়
স্কন্দপুরাণের দিকে এগোচ্ছে, সংক্ষেপে জাস্ট জন্মসাল আর স্থান যদি জানান
—দেখুন, সোজা কোনো উত্তর হয় না। স্থান বলতে গেলে মঙ্গোলিয়ার ওন্দোরহান শহর, উলান বাটোরের
পুবে, কিন্তু ব্যাপারটা অত ইজি না—বাংলা সাহিত্য করতে গেলে কলকাতায় একটা
জন্মস্থান চাই, মোর স্পেসিফিক্যালি, কলেজ স্ট্রিট। তা না হলে, বিশ্বের যে কোনো জায়গায় জম্মান, পরিচয় হবে ‘জেলার কবি’ আর জেলার কবি শব্দটা অক্সিমোরন, কবি কেন জেলার হবে, সে
মুক্তির উপাসক।
তাকে একমাত্র বাঁধা পড়তে হবে কলকাতায়। কলকাতা বুঝলেন, সারা পৃথিবী ঠিক এইখানেই
মিলিত হয়। আপনি যদি, সীতারাম
ঘোষ থেকে আড়াইশো মিলি সর্ষের তেল গড়িয়ে দেন, আর ঠিক কফি হাউসের সামনে কাত হয়ে শুয়ে
থাকেন, সে তেল গড়িয়ে গড়িয়ে নাকে ঢুকলে পৃথিবীর এসেন্স টের পাবেন। ফলে, লিখে নিন, জন্মস্থল, কলেজস্ট্রীট
কলকাতা। আর যদি কালের কথা বলেন, আমার এক জন্ম ১৯৭২-এ আর
আমার চেতনার জন্ম ২৫-শে বৈশাখ ১৮৬১। দেখুন ডুয়ালিজম হলো প্রাচ্যের একটা ব্যাপার—শুভ ও ইভিল দুই সমশক্তিমান, এবং একই সঙ্গে এগজিস্ট করে।
ক্যাথলিকরা এসে তাকে মোনোথেইয়িস্টিক করে,
ইভিলকে শুভর প্রডিগাল পুত্র বানিয়েছে। কোনো সেলফ-রেসপেক্টিং বাঙালি কবি, বুঝলেন মশাই, যতই
টুকুক, পাশ্চাত্যের সঙ্গে, ট্যুরিজম ছাড়া সম্পর্ক রাখে না। ফলে, টেকনিক্যালি, ভানু যেদিন জন্মেছেন, পানুও সেদিনই...।
—তা, পানুবাবু, আপনার লেখালিখির
শুরুর ব্যাপারটা?
—কংকাশন, বুঝলেন। যোগসর্প মাথায় তার কংক্রীট পেট দিয়ে ঢুঁসোলে যা
হয়। সেই যে যবন হরিদাস বললেন—মেরেছ, কলসীর কানা, তা বলে
কি কেস দোবো না!
—ইয়ে, একটা গন্ডগোল
হচ্ছে...সে তো মহাপ্রভো...
—মাথায় খেয়েচেন? কলসীর কানা! হিন্ডেলিয়াম নয় রে দাদা, টেরাকোটা, খেলে
চিত্তির, চিত্তির মানে হলো গে রবি ঠাকুর বলেচেন চিত্রার্পিত, ফটো হয়ে বাঁচন-মরণের মধ্যে
পেরেকে টাঙানো—যা বলছিলুম কংকাশন, তখন যা বলার সব হরিদাস পালই বলে—
যত্ত বাজে কথা! তা আমার সেজোকাকার খুড়শ্বশুরের মাসতুতো শালা (ঝুপো গোঁফ) বল্লে—সেন্টার
ডাজ নট হোল্ড, যৎ
পলায়তি সৎ জীবতি—
এ হল কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণ, আর এর প্রতিবাদে কোমলকরুণ গর্জে ওঠা আমাদের প্রত্যেকের
কর্তব্য। ফ্রীডম, মানে কবির স্বাধীনতা (বাকীরা নারকেল দড়ি দিয়ে নিজের নিজের হাত বাঁধা
প্যাকটিস করুক), আর দায়িত্ব— মানে যে কোন উপায়ে রবি
ঠাকুরে কর্মফল আরোপণ, এই জায়গা থেকে মশায় লেখালিখি শুরু।
—আপনার
নামের জেনেসিস, মানে উৎপত্তি নিয়ে যদি কিছু বলেন
—সে বলতে গেলে আমার মামা, বুঝলেন, চিত্তরঞ্জন দাশ, তাঁর নাম রেখেছিলেন
খদ্দর...
—আহা, মামা কেন? আপনার কথা বলুন, বি স্পেসিফিক
—মানে!!! মামা কি ইম্পর্ট্যান্ট নয়? এই যে মা-মাটি-মানুষ, এর আসল
অর্থই হল মামাটি মানুষ। মামা বাদ দিয়ে পৃথিবীতে আর আছে কি?
— কেন সুখেনবাবু যে বলেছিলেন—ভালোবাসা—ছাড়া
আর আছে কি!
—তাহলে, আপনি সুখেনবাবুর ইন্টারভিউ নিন। ওয়ার্ল্ডভিউ মানুষের আলাদা
হবে না! কী আস্পর্ধা! সুখেন বাবু তো এও বলেছিলেন— হয়তো আমাকে কারো মনে নেই— হাইপোথেটিক্যাল— হয়তো—গ্রামে থাকলে মানুষ মনে রাখবে না কেন? ফিউডাল সিস্টেমে গাঁয়ের লোকের
নাম ধাম কুলজি সব মনে রাখতে হবে। এই যে আমি মামাকে মনে রেখেছি, চিত্তরঞ্জনকে মনে রেখেছি,
এটা হল উল্লেখযোগ্য। হয়ত আমাকে কারো মনে নেই— এ আবার কি ধরণের স্টেটমেন্ট, আমি না অ্যামিবা, না অ্যামেবিক ডিসেন্ট্রি!
যত্ত ইল্লি!!!
—কিন্তু মামা তো সকলের থাকে না
—সে তো ভালোবাসাও থাকে না, কই সে নিয়ে আপনাদের তো সমস্যা নেই
—আপনার
প্রেরণা নিয়ে কিছু যদি বলেন, ইন্সপিরেশান আর কী!
— সে বলতে গেলে ইন্টারন্যাশনাল কোলাবোরেটিভ কাজকর্ম খুব ইন্সপায়ার
করেছে এককালে। যেমন রবি ঠাকুর আর ব্রাম স্টোকারের যৌথ রচনা—
ঘরেতে বাদুড় এল ঝুমঝুমিয়ে— পরে বুনুয়েল এ নিয়ে ছবি
করলেন, তাতে বেলি ড্যান্সের সিকোয়েন্সে কেরালার মার্শাল আর্ট—
ব্যাপারটা বুঝলেন ওই ঝুমঝুমিয়ে— বাদুড় আর ঝুমঝুমি কী যে
চুড়ান্ত আশ্চর্য মেলবন্ধন— ঝাঁকে ঝাঁকে বাদুড় উড়ছে,
প্রত্যেকের হাতে একটা করে ম্যারাকাস। এতদিন সোনারে চলত, এখন আম পাবলিক সোনারের সোনাটা
ম্যারাকাসের আওয়াজ দিয়ে টের পাচ্ছে।
—আচ্ছা, লেখার প্রসেসের
কথা বলুন, আপনার কি পাঠকের কথা মাথায় আসে? মানে লেখার সময়?
—কেন আসবে না, পাঠক যদি না পড়ে, তাহলে জঙ্গল মে মোর নাচা কিসিনে
না দেখা। মানে, অব্জারভেশান এফেক্ট না থাকলে শ্রডিংগার বেড়াল ঢুকিয়েছিলেন না
বাঁধাকপি— কে বিচার করে— পচলে মশাই
আইডেন্টিক্যাল গন্ধ! তবে ভায়ালে নাকি সায়ানাইডও ছিল, সে বেড়াল গুপ্তচর কি গুপ্তচর
নয়, সে নিয়ে প্রশ্ন। তবে পাঠক না থাকলে লেখা কেন?
—কিন্তু বাজার বলছে আপনার বই 'অস্তিত্ব ও নানচাকু' মাত্র ১৯ কপি
বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে ১২ কপি আপনিই কিনেছেন।
—দোর মশাই, আমার বই কি এক ডায়মেনশানে বিক্কিরি হয়? তাছাড়া মেজর
কাটতি তো 'চাঁদের ওপিঠে', সেখেনে আনুনাকিরা মনীন্দ্র গুপ্ত পড়ে বড় হয়। এই যে
আলোকলতা অণুবর্মন, এনার নাম এখানে কে জানে, অথচ ওনার বইয়ের মহাজাগতিক কাটতি
অবিশ্বাস্য!
—আপনি,
নিজের লেখাকে সাবভার্সিভ বলেন কিন্তু এই যে চিন্তামণি তলাপাত্র, আপনার একাধিক
বইয়ের আলোচনা করতে গিয়ে আপনাকে অজমূর্খ বলে...
—তলাপাত্র একখানি বোকাচোম্পা
(এডিটেড), ল্যাওঙ্গ (এডিটেড)। গাঁন্ডিবে (এডিটেড) দম থাকলে প্যানপিন্টুর দোকানের
সামনে আসুক! কত ধানে কত ছিটকিনি বুজিয়ে দেব। মামদোবাজি!
—
...........................................................................................................................
তদোগেন গিরতে ওরফে পানু সিংহ ওরফে অমোল ডিমেলো ওরফে লেখমণি প্রামাণিক—এদের পোষাকি পরিচয় সব্যসাচী সান্যাল। অধুনা নিবাস প্রাচীন লক্ষণাবতী বা এখনকার লখনৌ। যদিও ইনি সর্বার্থেই ভূপর্যটক ইটানগর থেকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং স্টকহোম থেকে বোলপুর—বিচরণে গেছো দাদা—সাহিত্যের ক্ষেত্রেও বাংলায় বিরলদের মধ্যে একজন যে কবিতা ও গদ্যকে তার একঘেয়ে কুয়োর বাইরে এনেছেন, যা আমাদের কাছে খোলা বাতাস, যা সমসময়ের পৃথিবীর সঙ্গে কথোপকথনের আনন্দ। সমসময়ের লেখাটা লিখতে গেলে কিছু প্রশ্ন বোধহয় এড়ানো যায় না—যেমন আমাদের খণ্ডিত অস্তিত্ব ও বহুস্তরীয় পৃথিবীতে অবস্থান। একই সঙ্গে আমরা উন্নয়নশীল বিশ্বের মফঃস্বলী ও উন্নত দেশের মেগাপলিসের বাসিন্দা হতে পারি, কারণ নিয়ত আমাদের কাছে তথ্য ও নানা মাধ্যমের হাত ধরে পৌঁছচ্ছে সংবেদ—এমন পৃথিবীতে মঙ্গোলিয়া হোক না নিউ ইয়র্কের হারলেম আমাদের কবিতা বিশ্বের বাইরে নয়—এইভাবে একটা জিও পোয়েট্রি ভৌগলিক সীমার বাইরে দাঁড়িয়ে আমাদের কবিতা বা সাহিত্য ভাবনাকে ধাক্কা দিয়ে চলেছে। ভাবনাকে এবং ভাষাকে। সেই ধাক্কার একটা নাম অবশ্যই সব্যসাচী সান্যাল।
Comments
Post a Comment