Posts

তদোগেন গিরতের 'ভৌতিক কবিতা'

Image
  ত দো গে ন  গি র তে ভৌতিক কবিতা বিষয় মানুষকে বড় বস্তু করে তোলে। মানুষ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে চায়, সমাজে, পত্রিকায়। আর গ্রহণযোগ্য বস্তু তাই, যা সংজ্ঞায়িত, আপাদমস্তক, জাতে নিরাপদ। ফলে বিষয়ী মানুষকে, নিজেকে আয়নায় দেখতে হয় বারবার—সংজ্ঞার সাথে, নিদেন পপুলার ধারণার সঙ্গে তার মিল আছে কি-না—মাথার টাকটি, পকেটের চিরুনি; দেখা পড়ে। অথচ তর্জনী যেখানে মধ্যমার সঙ্গে কথা বলে, সেখানে নিকোটিন, কালচে হলুদ ছোপ — সে কি চোখে পড়ে?   সংজ্ঞা সাদা-কালো—হয় সমস্ত রঙ সে রিফ্লেক্ট করবে নয় শুষে নেবে—দ্বিমত, অনিশ্চিতি, সংশয়, দ্বিধার বিপক্ষে এই অবস্থান—চিরকাল ভালো লাগে নাকী! ফলে, ক্ষণে ক্ষণে মনে মনে লাগুক না লিবার্টি!   হোক নানা কথা, কিঞ্চিৎ আলাপ—সাগাপাধারাধাগাধা... তৎসমে কিছু কালোয়াতি— মনে রেখ, 'কল্মাষপাদ' (দৃশ্যমান বায়ু) গ্রন্থে ভবভূতি লিখিয়া গেছেন—   ‘শূন্য কলসে, অনুস্বর উড়ে এসে বসে সমস্কিতে শব্দ হয় ঢক্কাং ঢক্কাং’   ১   বিশ্বাস :   ভূত একটা বাস্তবিক ব্যাপার। যা কিছু সিদ্ধান্তের ফসল তাই বাস্তবিক। আমাকে কী হন্ট করবে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার পর ভূত নির্মিত হয়। তাকে অতীত বলে ডেকে ফেলল...

প্রশান্ত হালদারের কবিতা—জন্মদিনে মদ খাও বন্ধুরা

Image
জন্মদিনে মদ খাও বন্ধুরা প্র শা ন্ত হা ল দা র সময় রেখেছি কেটে আগুনের পাশে দাহ্য কিনা বড় কথা নয়, বেলুনে বাতাস ভাসে রোদে প্রেম হয় দুজনার ম’রে। সখ্য হলে ভালো হতো কিনা তার চেয়ে ভাবনার—তুমি কি পড়ছো এই লেখা? ওপাড়ায় রাতে কি বসন্ত দেখা যায়? শ্রাবণের মাতাল খচ্চর আমি, ওলো হে সজনী তাকে কি আদর দেবে আজ দেবে কি শরীর পোড়া ছাই দেবে কি তোমার কালি—মুখ লুকোবার?   যত প্রেম, লুকোনোর ততোই বাহানা… দাও আরো গোপনতা, মদে বিষ, বরফের কুচি এ কেমন রসিকতা, মাংসে নেই আলু প্রেমে নেই দেহ প্রেমিক সন্দেহ মুছে গরম চুম্বনে প্রশ্নহীন করে তোলো ঠোঁট!— কবরের ফুল যেন—নির্দ্বিধায় অশরীরি ভেবে রেখে যাও আস্ত মাংসপিণ্ড   যদিবা চেঁচিয়ে উঠি লাশঘর থেকে বাংলা ভাষার কন্দরে যদি কোনো আর্তনাদ রেখে যেতে চাই— প্রেম নয়, হাহাকার নয় সবই যে ফাজিল ছিল, মাতলামি—বিশ্বাস হবে না তাও জেনো, আদুল শরীরে জোকস ছাড়া লিখিনি কিছুই। ভালোবাসা, রাজনীতি, দর্শনের ভার সাধারণ অশ্লীলতা ছেড়ে আরো নিচে তোমাকে খুঁজছি আমি, গুগুল ড্রাইভে…   ইথার তরঙ্গে ভাসে অস্তিত্ব কতটা মেপেজুকে হাঁটা যাক মনোরম ভোরে   মদ খাও জন্মদিনে বন্ধুরা আমার আসলাম, আপাতত, ভাসছে বাতাস ...

নতুন কবিতা। প্রশান্ত হালদার

Image
মনে হয় মৃত্যুর পক্ষ নিই। পাড়ায় মতান্তর। কান পাতলেই নিজের কতো অজানা দিক উঁকি মারে। এই ধ্যান, মগ্নতা— এর কোনো মূল্য নেই! কতো বার ভেবেছি, বলার কিচ্ছু ছিল না। এমনকি আর্তচিৎকারও অপ্রয়োজনীয় মনে হতো, বাধ সাধলো ভাষা। ঐতিহ্য বাতিলের পথ আগলে ধরে ভাষার করুণ হাত ফলে আমি ফিরতে চাইলাম, যে জীবন উদ্দেশ্য খোঁজার দায়ে বাতিল, তার কাছে তার রোমশ ভাবনার পাশে, মরে আছি; এই লেখালিখি, চায়ের দোকানে ভিড় জমানো, বাস্তবে না হলেও, কল্পনায় বেঁচে থাকার আতুর ঘোষণা এর কোনো ওঠাপড়া নেই, পক্ষ-বিপক্ষে যত শুনানি, চতুরতা, ধরো, বিফল যতবার মৃত্যুর পক্ষ নিই, ওরা আমাকে খুনীর মর্যাদা দেয়। এই ভাবে মৃতদের থেকে জগত আলাদা হচ্ছে, স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, দুনিয়াজোড়া যত স্মৃতিসৌধ, মৃতদের ছবি ও স্মরণোৎসব, গাল বেয়ে পড়া লোনা জল সবই একটা ফাঁকা আওয়াজ, শূন্যতায় এগোতে পারে না। এর মধ্যে কোনো আলো নেই, ফলে দৃশ্য অধরা  ১২ই জুলাই, ২০২০

পবিত্র সাঁফুইয়ের গল্প

Image
  প বি ত্র   সাঁ ফু ই নাক বরাবর সর্বসম্মতিক্রমে এগনোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু মনের ভিতর একটা খুঁতখুঁতানি। সরোজিনীর আপত্তি ছিল, "এগিয়ে যাওয়া ব্যাপারটা কী? ডানে, না বামে, কোনদিকে আমাদের গন্তব্য? পিছনের দিকের পথেও কি এগনো যায় না!" সমীরের যুক্তি, "পিছনের পথ তো চেনা। সে পথ তো আমরা ফেলে এসেছি।" সরোজিনী বলল, "কিন্তু, এগিয়েছি কি? তুমি কি নিশ্চিত যে পেছতে পেছতে এখানে আসোনি? এরকম পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়া এগিয়ে যাওয়ারই সমার্থক।" কেউই ফিরতে আগ্রহী নয়। গোপনে ভেবেছিলাম সরোজ ফিরে গেলে আমিও যাব। ও জেদাজেদি করেনি দেখে নিশ্চিন্ত হলাম। এরপর ডান-বাম নিয়ে আলোচনা চলল একপ্রস্থ।  কেউ কেউ ডানের সমর্থনে হাত তুলল, বামের হয়ে বলার মতো লোকেরও অভাব ছিল না। দুটোই বাতিল করতে হলো সঙ্ঘবদ্ধতার খাতিরে। অভ্যাসবশত নাক বরাবর যাওয়াই স্থির হলো। কেউই আর আনাচ-কানাচ, গলি-ঘুঁজি নিয়ে প্রশ্ন করার সাহস পেলো না। সর্বসম্মতি বিষয়টি আসলে সমবেত সমঝোতা, বোঝা গেলো। অজিতের মাথায় অন্যরকম জ্যামিতি, "আমরা তো কেউই নিজের নাকটা প্রায় দেখতে পাই না। নাক বরাবর যাচ্ছি বুঝব কী করে? তাছাড়া নাকের দিকে বেশী মনোযোগ দি...