বি শ্ব না থ পু র কা ই তে র চারটি কবিতা





















বি শ্ব না থ   পু র কা ই ত

ঘটনাচক্রে

 

 

১।

বাগানে এলে মানুষের রোগ-শোকের খেয়াল থাকে না; গাছেদেরই এত রোগ। ঐ ফলগাছগুলো গেল বছর উপচে পড়েছিল, এখন নিজেরাই মরা ডালের সিল্যুয়েট। নারকেল গাছটা বাঁজা। সার-বিষের অভাব রাখিনি, তবু কোথাকার পোকা এসে ফুলগাছগুলো ঝাঁঝরা করে দিল। এটা নতুন, জঙ্গুলে, সরে আসুন, মানুষের নিঃশ্বাস নাকি ওর পক্ষে তত ভালো নয়।

 

২।

নদী পারাপারের স্মৃতি বয়ে বেড়াতে হয়। মাতলা একরকম, কালিন্দী আর এক। রায়মঙ্গল পেরতে গিয়ে কেউ কেউ শুনি নৌকোর খোলে এখনও পেচ্ছাপ করে ভয়ে।  মাঝিরা কেমন? পুরনো মাঝিদের দুএকটা খেউড় লেগে আছে কানে।

 

৩।

স্পষ্ট না হলে কিছুই বুঝি না। কতবার ইঙ্গিতের উল্টোদিকে চলে গেছি, কল্পনাশক্তিও মাঝে মাঝে দম হারিয়ে ফেলে। সব প্রয়াসেই জিজ্ঞাসা মিশে থাকে। নিজেকে প্রশ্ন করে বুঝি উত্তর আমাকেই দিতে হবে। আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন,

সতর্কতাবোধও এক শিহরণ, স্বপ্নের মতন

মোক্ষম সময়ে ভেঙে যায়

 

৪।

আমার সময় তোমার সময় মিলে আমাদের গড় সময়।  এসো এই মুহূর্তকে সন্ধ্যা বলে মেনে নিই; কালভার্টে পা ঝুলিয়ে বসি। দুএকটা শুকনো ঘাস আলস্যে ছুঁড়ে দিয়ে দেখি কতদূর ভাসে সমুদ্রে যাবে? পচে যাবে? এসো, গড় সম্ভাবনার কথা ভাবি।



.......................................................................

Gustav Klimt-এর "Pine Forest"(1902) চিত্রটি উপরে ব্যবহার করা হয়েছে। (সৌজন্যে: অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়)


বিশ্বনাথ পুরকাইত ৯০ দশকের কবি। এযাবত তাঁর পাঁচটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। 'নিম্নচাপের দিনগুলি' (১৯৯৮)। 'শান্তি-শৃঙ্খলা' (২০০৩)। 'খণ্ড-চৈতন্য' (২০০৬)। 'মিশ্রপ্রতিক্রিয়া' (২০১৩)। 'ভাষাবাহিত রোগশোক' (২০১৮)। 

বিশ্বনাথ পুরকাইতের আরো কবিতা পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন:

https://museumrural.blogspot.com/2020/05/blog-post_72.html


https://cholobhash.com/archives/4516

https://cholobhash.com/archives/5587




Comments

  1. বিশ্বনাথ স্বগতোক্তির সম্রাট। আর এভাবেই, পাঠকের প্রত্যাশায় ক্রমাগত ইন্ধন জুগিয়ে যাওয়ার দায়দায়িত্বও, সুতরাং, একান্ত তাঁরই।

    তাঁর কাছ থেকে আরো কিছু নতুন ধরন পেতে পারি? মানে, সমান্তরালে? কেননা, বিশ্বনাথের বর্তমান ভাষাটি বাংলা সাহিত্যের ঘোলাটে কাদাজলে আশ্চর্য ঝকঝকে সজীব এবং আনকোরা, তার গায়ে বয়স বা পরিপার্শ্বের মালিন্য নেই একেবারেই।

    তাই, তাঁর অমিত শক্তির কাছে আবদার রেখেই বলছি, পাশাপাশি আর একটু অন্য ন্যারেটিভও আসুক না। তাতে লাভ বই ক্ষতি তো নেই!

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

সরসিজ বসুর সাক্ষাৎকার। স্বর্ণেন্দু সেনগুপ্ত

তদোগেন গিরতের 'যে কথা মরমে বাজার নয়'

প্রশান্ত হালদারের কবিতা—জন্মদিনে মদ খাও বন্ধুরা